চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীদের অন্যতম প্রতিষ্ঠান শিপিং এজেন্টদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে ঐক্য পরিষদ পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হয়েছে। নির্বাচনে ২০২৫-২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন নাফ মেরিন সার্ভিসেসের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী।
আর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান কে এম সি শিপিং লাইনসের আজিম রহিম চৌধুরী ও সেভেন সিজ শিপিং লাইনসের মোহাম্মদ আলী আকবর এবং ভাইস চেয়ারম্যান মার্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকসের ক্যাপ্টেন আলাউদ্দিন আল আজাদ ও এ. এ. শিপিং সার্ভিসের মোহাম্মদ মশিউল আলম নির্বাচিত হয়েছেন।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) নগরীর আগ্রাবাদ মক্কা মদিনা টাওয়ারে অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ডিরেক্টর (জেনারেল) ক্যাটাগরি থেকে ১৩ জন এবং ডিরেক্টর (অ্যাসোসিয়েটস) ক্যাটাগরি থেকে ৬ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
তথ্যমতে, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশেনে মোট পদ রয়েছে ২৪টি। এর মধ্যে একজন চেয়ারম্যান, দুজন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, দুজন ভাইস চেয়ারম্যান এবং জেনারেল ক্যাটাগরির ১৩ জন এবং এসোসিয়েট ক্যাটাগরির ৬ জন মিলে ১৯ জন পরিচালক।
আগে ভোটারদের সরাসরি ২৪ জন পরিচালক নির্বাচিত হতেন। উক্ত ২৪ পরিচালক বসে নিজেদের প্রেসিডিয়াম নির্বাচিত করতেন। ভোটারদের মধ্যেও জেনারেল ক্যাটাগরির ভোটার জেনারেল ডিরেক্টর এবং এসোসিয়েট ক্যাটাগরির ভোটার এসোসিয়েট গ্রুপের ডিরেক্টর নির্বাচিত করতেন।
কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আসন্ন নির্বাচনের জন্য দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জেনারেল বা এসোসিয়েট যে গ্রুপের ভোটারই হোন না কেন, একজন ভোটার ২৪টি ভোট প্রয়োগ করবেন। চেয়ারম্যান, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদেরকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হতে হবে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন ১৬১ জন। এর মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছে ৮৩ জন। রবিবার সকাল ৮ থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশ সুষ্ঠভাবে ভোট কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

এদিকে ডিরেক্টর (জেনারেল) ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হলেন- আরগো শিপিং সার্ভিসেস লিমিটেডের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আলী, এশিয়াবাল্ক মেরিটাইম প্রা. লিমিটেডের অঞ্জন মজুমদার, এভার চিয়ার শিপিং লাইনসের মোহাম্মদ শফিউল আলম, এইচ সি মেরিন লিমিটেডের নুরুন নবী, কন্টেনার ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস (বিডি) লিমিটেডের এস এম এনামুল করিম, গো পোর্ট শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিংয়ের মোহাম্মদ দিদারুল আলম চৌধুরী, মাল্টিমুভ শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেডের মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুস, ওশান কিং কন্টেনার লাইনসের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন খান (হাসান), এস কে শিপিং বিডির এটিএম জহিরুল ইসলাম, কে এস এম শিপিং এজেন্সিস (প্রা.) লিমিটেডের কাজী মনসুর উদ্দিন, ইউনাইটেড সি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির সরফরাজ কাদের, আমান শিপিং এজেন্সির আনোয়ারুল কবির কামরুল এবং শামসে জোহাকে শিপিং লিমিটেডের আকিব হাসনাত।
একইভাবে ডিরেক্টর (অ্যাসোসিয়েটস) ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হলেন, সমুদ্র শিপিং লাইনস লিমিটেডের মাসুদ আহমেদ, অ্যাডমিরাল শিপিং লাইনস লিমিটেডের মোহাম্মদ শাহীন, পার্ক শিপিং লাইনের মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পাটোয়ারী, প্রাইমেক্স লজিস্টিকস ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ ফরহাদুল আলম চৌধুরী, মেরিটাইম সার্ভিসেস লিমিটেডের মোয়াম্মার আহমেদ এবং সাউথ ইস্ট মেরিটাইমের মোহাম্মদ মনসুর আলী।
নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান কমডোর (অব.) এজেডএম জালাল উদ্দিন বলেন, সকাল ৮ থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে মোট ১৬১ ভোটারের মধ্যে ৮৩ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু নির্দেশনায় এবার নির্বাচনের ধরনে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে পরিচালকদের পরিবর্তে ভোটারদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আগে পরপর দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কেউ এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেনি।
আবার শিপিং এজেন্সির মালিক বা শেয়ার হোল্ডার না হলেও প্রার্থী হতে পারেনি। আগে মালিকের অথরাইজেশন নিয়ে প্রতিষ্ঠানের জিএম, ম্যানেজারসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রার্থিতার সুযোগ পেতেন। বিগত দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা এবং মালিকানা ছাড়া অন্যদের প্রার্থিতার সুযোগ বন্ধ করে দেয়ায় এবার প্রার্থী সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে গেছে।
