দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হলেও বেকারত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা এখনো পুরোপুরি সক্ষম হইনি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও বেকারত্বের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের বড় কর্মসংস্থান অনানুষ্ঠানিক খাতে। এগুলোকে আনুষ্ঠানিক খাতে আনতে হবে। যদিও এটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
বাজেটে যদি কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি আনা না হয় তবে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে। এক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের আরও পরিকল্পিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার ‘জাতীয় স্বপ্নবাজেট-২০২২-২৩: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কি ধরনের বাজেট প্রয়োজন’ শীর্ষক প্রাক-বাজেট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আতিউর রহমান ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান ব্যুরোর শ্রমশক্তি জরিপ উল্লেখ করে বলেন, সোয়া ৬ কোটি দেশের কর্মক্ষম নাগরিকের সংখ্যা। তবে বেকারের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। সার্বিকভাবে এই অংক অনেক বেশি। করোনায় এটি আরও বেড়েছে। নীতি-নির্ধারকরা যে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে যথাযথ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তা করোনাজনিত অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থার সময়ই লক্ষ্য করা গেছে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, করোনা সংকট কাটিয়ে রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে যাচ্ছে। তবে আমদানি ব্যয়ও বাড়ছে। এটি কমিয়ে আনতে হবে। টেক্সটাইল, কৃষি-প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি প্রথমবারের মতো এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার দাঁড়িয়েছে।
সাবেক গভর্নর বলেন, জাতীয় পরিকল্পনায় মুখ্য ভূমিকা দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে থাকতে হবে। কেননা এর আগে জাতীয় অষ্টমবার্ষিক পরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে সোয়া এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ কৌশলের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া আছে।
পদ্মা সেতুর কারণে অর্থনীতির বিকাশ ও বিনিয়োগ বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায়। আমাদের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে গেম চেঞ্জার। কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধির বিপ্লব ঘটবে। মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস ও দৈনিক আনন্দবাজার ওয়েবিনারটির আয়োজন করে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ও দৈনিক আনন্দবাজারের বার্তা সম্পাদক নিয়ন মতিয়ুল।
বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ। এনায়েতুল্লাহ কৌশিকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জীম মণ্ডল।