ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৪

দেশজুড়ে আনন্দের ঢেউ

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। লাখ লাখ মানুষের সেই জনসভায় অভিন্ন স্লোগান ছিল- ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। সেই পদ্মার পাড়ে আজ শনিবার উৎসবে মাতছে লাখ লাখ মানুষ। পদ্মা সেতু ঘিরে আনন্দ ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশজুড়ে। আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর কাল রোববার ভোর থেকে সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতুর দুয়ার। সেই আনন্দের রোশনি এখন দিকে দিকে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। আতশবাজিতে আলোকিত হবে রাতের আকাশ। দেশের পথে প্রান্তর ছেয়ে গেছে ব্যানার ফেস্টুনে।

বর্ণিল আলোয় নতুন চেহারায় অপরূপ সেজেছে রাজধানীর হাতিরঝিল। পুরো এলাকা নানা রঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছে। দেশের প্রতিটি জেলার স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে থাকছে আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি প্রতিটি জেলায় বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পুলিশও আয়োজন করছে নানা অনুষ্ঠান।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজনের মধ্যে রয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জেলার টাউন ফুটবল মাঠে বড় পর্দায় উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জেলার প্রতিটি থানা চত্বরে পদ্মা সেতু-সংশ্নিষ্ট ব্যানার ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার কার্যালয় ও থানা ভবনে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। সকালে পুলিশ লাইন্সে বড় পর্দায় উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হবে পুলিশ সদস্যদের।
একইভাবে চট্টগ্রাম নগরে পদ্মা সেতু থেকে শত শত মাইল দূরে হলেও আনন্দ-উৎসাহের যেন কমতি নেই। উদ্বোধন ঘিরে অন্যরকম এক উৎসব চলছে বন্দরনগরীতে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য কর্মসূচি পালন করেছে। নগরবাসীকে সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি দেখাতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বসানো হয়েছে বড় পর্দা, বের করা হবে আনন্দ মিছিল। ফোটানো হয় আতশবাজি, থাকছে কনসার্টসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সাজানো হয়েছে খুলনা মহানগরী। প্রধান প্রধান সড়কে শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে লাগানো প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন। এ ছাড়া নগরীর সড়ক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সব ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সেতু উদ্বোধনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে আজ দিনভর নানা আয়োজনের সঙ্গে রাতে জেলা স্টেডিয়ামে থাকছে আতশবাজি এবং নান্দনিক লেজার শো।
ফরিদপুর, শহরের প্রধান সড়কে স্থাপন করা হয়েছে সুদৃশ্য তোরণ। মাহেন্দ্রক্ষণটি স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হয়েছে দু’দিনের অনুষ্ঠান। আজ সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হবে। শেখ জামাল স্টেডিয়ামে পদ্মা সেতুর একটি বড় রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় আয়োজন করা হয়েছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কাল পদ্মা সেতু নিয়ে স্বরচিত কবিতা, গল্প ও ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়েও দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বীর মুক্তিযোদ্ধা স্টেডিয়ামে বানানো হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা (অবিকল প্রতিরূপ)। এ ছাড়া জেলা শহর থেকে উপজেলা শহরের বিভিন্ন মোড়, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়ক সজ্জিত করা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ভোরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি পুরোনো স্টেডিয়ামে বড় পর্দায় সরাসরি দেখানো হয়।
পিরোজপুরে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে জেলা প্রশাসন।