ই-পেপার | শনিবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

নতুন সংবিধান তৈরিতে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে

সর্বদলীয় অভিভাবক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান তৈরীতে সবার অংশগ্রহণ ও কনসেন্ট নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রিটি ফর সার্ভিং হিউমেনেটি (উইশ)।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টা, জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মানিক মিয়া মিলনায়তনে “ইনট্রোডাকশন অব পিপলস উইল ২০২৪ ও নতুন সংবিধানের আকাঙ্খা” বিষয়ে গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি জানানো হয়।

উইশ প্রধান ছিদ্দিকুর রহমান এর পরিচালনা ও সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে কি নোট উপস্থাপন করেন লেখক ও বুদ্ধিজীবী রিফাত হাসান।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর মাইমুল আহসান খান, শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্লেষক শাহ আলম, ব্যারিস্টার মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, এবি পার্টি সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার সানী আবদুল হক।

বুদ্ধিজীবী রিফাত হাসান বলেন, “এথিক্যাল অথরিটি হয়ে ওঠার ব্যর্থতার কারণে নতুন সংবিধানের দাবী করছি আমরা। বর্তমান সংবিধান যার নেতৃত্বে এডপ্ট হয়েছিল, সেই শেখ মুজিব নিজে এই সংবিধানরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। এই সংবিধান তার বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নাই।

সর্বশেষ, ছাত্রদের উপরে ২৪ এর যে জেনোসাইড হল, তার বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নাই এই সংবিধান। ফলে পুরোপুরি এথিক্যাল অথরিটি হারিয়েছে।

এখন, এই গণঅভ্যুত্থান থেকে আমাদের হারানো রাষ্ট্রের মালিকানা রিক্লেইম করার অথরিটি তৈরী হয়েছে। এই মালিকানা রিক্লেইম করার জন্যই নতুন সংবিধান তৈরী দরকার। এর জন্য সর্বদলীয় অভিভাবক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান তৈরীতে সবার অংশগ্রহণ ও কনসেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।”

প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান তার আইনশাস্ত্র পড়ানোর ব্যাপক দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞতার আলোকে ইনফর্মাল ভঙ্গীতে কথা বলেন।

তিনি বর্তমান সংবিধানকে একটি অপ্রয়োজনীয়ভাবে ফুটনোট দিয়ে ভরা দলিল বলেন। এছাড়া তিনি এই সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার ডকট্রিনের সমালোচনা করেন। তিনি এটিতে ভারতীয় সংবিধানের খারাপ ধারাগুলি গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এই সংবিধান ব্যবহার করেই ফ্যাসিবাদ ও গণহত্যা করেছেন। তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরতে হলে সংবিধান তাদেরকেই লিখে ফেলতে হবে। এটাকে যত জটিল বা কঠিন বলে দেখানো হয় আসলে তা নয়। তিনি সংবিধানকে একটা মূলনীতি বা সূত্রের দলিল বলে মত প্রকাশ করেন। এটিকে অযথা বিভিন্ন আইন ও বিধানের সংকলন বানানোর তিনি তীব্র সমালোচনা করেন।

ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, বর্তমান সংবিধান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আকাংখার প্রতিফলন ঘটায়নি। সংবিধানের আমুল পরিবর্তন অনিবার্য। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংবিধানের অপরিবর্তনশীল অনুচ্ছেদগুলো ফ্যাসিজম চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।

আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন, লেখক ও গবেষক মনওয়ার শামসী সাখাওয়াৎ, আমানুল্লাহ, উম্মে ফারহানা, সংবিধান ও আইন বিশ্লেষক আরিফ খান, শিক্ষক ও গবেষক ড. ছালেহ্ মুহাম্মদ শাহরিয়ার, নাফিজ আহমদ, সরওয়ার ওদুদ চৌধুরী, ফজলুল করিম, কথাসাহিত্যিক ও চিন্তক ফারুক আব্দুল্লাহ , নাশাদ মযুখ, সৌরভ মাহমুদ, আব্দুল মুকিম প্রমুখ।