ই-পেপার | মঙ্গলবার , ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখলেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েস কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে আসছেন।
গত সোমবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসসহ একটি প্রতিনিধি দল উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টে পৌঁছান। সেখানে তিনি দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন। পরে প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার বেশ কয়েকটি ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। এসময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা তার সঙ্গে ছিলেন।

এছাড়াও প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের জন্য পরিচালিত বিভিন্ন সংস্থার মানবিক কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করে। জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। এসময় প্রতিনিধি দল ক্যাম্পে লার্নিং সেন্টার, ফুডস ডিস্ট্রিবিউশনসহ প্রতিবন্ধিদের একটি সেন্টারে কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।’ আর উখিয়া ক্যাম্প-৪ সহ মার্কিন প্রতিনিধি দল কয়েকটি ক্যাম্প ঘুরে দেখেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসকে কাছে পেয়ে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন রোহিঙ্গারা। সোমবার সকালে কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে যান যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধি।
সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়িবহর কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে পৌঁছায়। প্রথমে তিনি ক্যাম্প-৯ এর সার্ভিস সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ পরিদর্শন শেষে সেখানে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন মন্ত্রী।
, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আশ্রয় শিবিরে থাকার পরিবেশ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন? মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গারা রাজি কিনা? মিয়ানমারে পরিবেশ কেমন ইত্যাদি।
জবাবে কয়েকজন রোহিঙ্গা ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা ও নিপীড়নের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফিরতে রাজি। কিন্তু ফেরার আগে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং যেখান থেকে (রাখাইন রাজ্য) রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, সেই বসতভিটায় পুনর্বাসন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, মর্যাদার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মানবিক সেবায় রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে দেশটি।মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (ক্যাম্প ইনচার্জ) মো. খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্রয় শিবিরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, ত্রাণ ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন।
বিকেলে সড়কপথে কক্সবাজারে পৌঁছে বিমানে ঢাকায় ফিরেন তিনি। ৭ ডিসেম্বর মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাইল্যান্ডের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।