নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে পাকিস্তানের মালিকানাধীন হাবিব ব্যাংক সিলেট শাখা ও ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের বিরুদ্ধে সমাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এসব কর্মকান্ডে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত শাস্তির দাবিও জানানো হয়।
এদিকে পাকিস্তানের মালিকানাধীন হাবিব ব্যাংক লিমিটেডের সিলেট শাখায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান করার বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ হয়েছে।
স্থানীয়রা বিষয়টি লক্ষ্য করলে তারা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় এবং ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে পতাকাটি নামিয়ে নেন।
গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা টাঙানোর জন্য খুঁটির পরিবর্তে একটি ঝাড়ু ব্যবহার করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবসে, নাগরিকরা পাকিস্তানের মালিকানাধীন একটি ব্যাংকের অসম্মানজনক কাজের জন্য দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
তবে এই বিষয়ে বন্ধ থাকায় হাবিব ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোন মতামত জানাননি। ওইদিন সন্ধ্যায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি খুঁটিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে।
ঘটনার পর সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন হাবিব ব্যাংকের সিলেট শাখা পরিদর্শন করেছেন।
-
একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছ। এ বিষয়ে ব্যাংকের সিলেট শাখায় তিনি লিখিত ব্যাখ্যা দেবেন। তার ব্যাখ্যা পাওয়ার পর আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
একইভাবে গত ২১ জুলাই ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের কভার ফটো হিসেবে আপলোড করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা। সেখানে গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকা একীভূত করে প্রকাশ করা হয়।
তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তানের সমালোচনার পাশাপাশি আপত্তি তুলেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
পতাকার ছবিটি পোস্ট করার পর পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। পরে পাকিস্তান হাইকমিশন কমেন্টস অপশন বন্ধ করে দেয়। তবে নানা বিতর্কের পর সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২৩ জুলাই বিকেল ৫টার মধ্যে বাংলাদেশের পতাকাযুক্ত ছবি সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া। ঢাকার নির্দেশনার প্রায় ১৯ ঘণ্টার কাছাকাছি সময়ে ছবিটি সরিয়ে নেয় পাকিস্তান হাইকমিশন।
এদিকে পাকিস্তানের ঢাকার হাইকমিশনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এক প্রতিবাদ লিপিতে সংগঠনটি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
-
মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও গণধর্ষণে জড়িত পাকিস্তানের ঢাকার হাইকমিশন তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যা বাংলাদেশের প্রচলিত পতাকা বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের এ ধরনের ধৃষ্টতা কখনোই কাম্য নয়।
সরকারের কাছে দাবি, অবিলম্বে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ বলেছে, একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে, যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কখনোই মেনে নেবে না।
লেখক: সাংবাদিক